শিক্ষায় ৫০ বছরের অর্জন

শিক্ষাখাতে উল্লেখযোগ্য অর্জন নিয়ে বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী পালন করেছে বাংলাদেশ

মুক্তিযুদ্ধের সময় জন্ম এমন একজন শিক্ষকের মতে, বাংলাদেশের মত উন্নয়নশীল দেশে প্রাথমিকে প্রায় শতভাগ ভর্তি, বছরের প্রথম দিনে বিনামূল্যে নতুন বই আর শিক্ষায় লিঙ্গ সমতার মত বিষয়গুলো এখন বিশ্বের কাছে উদাহরণ। তবে চ্যালেঞ্জও আছে বেশকিছু।

মহান মুক্তিযুদ্ধ শেষে বিজয় অর্জনের ২৪ দিন পর ১৯৭২ সালের ১০ই জানুয়ারি দেশে ফেরেন স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এরপর লেগে গেলেন ধ্বংসস্তুপে পরিণত হওয়া একটি দেশ গঠনের কাজে।

বঙ্গবন্ধু অনুধাবন করলেন শিক্ষা ছাড়া জাতির উন্নয়ন কোনভাবেই সম্ভব নয়। ১৯৭৩ সালে ৩৭ হাজার ৬৭২টি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করলেন। ৭৪ সালে গঠন করলেন ড. কুদরত-ই-খুদা শিক্ষা কমিশন। সেই কমিশনের দেয়া মূল্যবান পরামর্শেই চলতে থাকলো দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা। কিন্তু, ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার মধ্যে দিয়ে আবারো দেশের উল্টোপথে যাত্রা।

যে স্বপ্নের বীজ জাতির পিতা বুনেছিলেন, ক্ষমতায় আসার পর সেসব স্বপ্ন বাস্তবায়নে হাত দিলেন তার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিশেষ করে দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর একেরপর এক মাইলফলক অর্জিত হয়েছে শিক্ষাক্ষেত্রে।

২০১৩ সালে ২৬ হাজার ১৯৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করে সরকার। ২০১৯ সালে ২ হাজার ৭৩৬টি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হয়। আর কয়েক বছরে ৫শ’র বেশি স্কুল ও কলেজ সরকারি করা হয়েছে। উচ্চশিক্ষা ছড়িয়ে দিতে একের পর এক বিশেষায়িত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হচ্ছে। বেড়েছে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যাও।

দেশে স্বাক্ষরতার হার এখন প্রায় ৭৫ শতাংশ। প্রাথমিকে ভর্তির হার প্রায় শতভাগ। এ স্তরে ঝরে পড়ার হারও এখন শূন্যের কোটায়। প্রাথমিকে ছেলের চেয়ে মেয়ে শিশুর হার ২ শতাংশ বেশি। বছরের প্রথম দিনই প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীদের দেয়া হয় বিনামূল্যে প্রায় ৩৬ কোটি নতুন বই। গেল কয়েক বছরে জেএসসি, এসএসসির ফলাফলে ছেলেদের চেয়ে এগিয়ে থাকছে মেয়েরা। বাংলাদেশের জন্মের সময় যাদের জন্ম তারা এই অর্জনগুলো নিয়ে গর্ববোধ করেন।

নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক নাজমুন নাহার বলেন, ১৫ বছর প্রবাসে থাকার পর দেশে ফিরে যখন দেখি আমার ছাত্র-ছাত্রীরা ভালো কিছু করছে তখন খুব ভালো লাগে। বর্তমানে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলেও দরিদ্র পরিবারের সন্তানরাও লেখাপড়া করছে। তারাও ভালো কিছু করার স্বপ্ন দেখছে।

 

এখন দেশের প্রায় প্রত্যেকটি সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামোগত উন্নয়ন করা হয়েছে। ধীরে ধীরে কারিগরি শিক্ষাকে ৫০ শতাংশে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্য ঠিক করেছে সরকার। তবে চ্যালেঞ্জও আছে বেশ কিছু। দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলছে বাংলাদেশ। এগিয়ে চলছে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাও।

Scroll to Top